প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
বৌদ্ধ সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাস্তুচ্যুত, নির্যাতন ও গণহত্যায় মিয়ানমারের জান্তা সরকারের অংশীদার
আমেরিকার প্রক্সি আরাকান আর্মিকে মানবিক সাহায্য প্রদান করা রোহিঙ্গা মুসলিমদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা এবং গণহত্যাকারী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের মদদদাতা আমেরিকার প্রতি আনুগত্যের নির্লজ্জ দৃষ্টান্ত
রোহিঙ্গা মুসলিমদের জাতিগত নিধনে মিয়ানমারের খুনী জান্তা সরকারের প্রত্যক্ষ অংশীদার বৌদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যখন উপনিবেশবাদীদের ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের শিকার হয়ে গৃহযুদ্ধে পর্যদুস্ত, তখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে আমেরিকা নিয়ন্ত্রিত জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ‘মানবিক করিডর’ দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এর মাধ্যমে ব্রিটেন সমর্থিত জান্তা সরকার কর্তৃক আবদ্ধ (entrapped) মার্কিন মদদপুষ্ট বৌদ্ধ সন্ত্রাসী আরাকান আর্মির জন্য প্রয়োজনীয় রসদ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। আমরা দেখেছি, ব্রিটেনের অনুগত পতিত হাসিনা সরকার আরাকান আর্মিকে মোকাবেলা করতে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের সামুদ্রিক অঞ্চলে জান্তা বাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ চলাচলের সুযোগ করে দিয়েছিল এবং চলমান তীব্র লড়াইয়ের জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর শতাধিক সদস্যকে ফুল দিয়ে বরণ করে জামাই আদর করে নিজ ভূমিতে ফেরত পাঠিয়েছিল, যাদের হাতে আমাদের রোহিঙ্গা মুসলিম ভাই-বোনদের রক্ত লেগে আছে। আর এখন দেখতে পাচ্ছি, অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রোহিঙ্গা মুসলিম নিধনের আরেক অংশীদার আরাকান আর্মিকে এদেশের জামাই হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিশ্বাসঘাতক হাসিনার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে। এর মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা এবং কাফির উপনিবেশবাদী আমেরিকার প্রতি আনুগত্যের নির্লজ্জ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। “নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বিশ্বাসঘাতকদের পছন্দ করেন না” [সূরা আল-আনফালঃ ৫৮]।
হে মুসলিমগণ, রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রত্যাবাসনে উপনিবেশবাদী আমেরিকার মায়াকান্না তার আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ বহির্ভূত কোন বিষয় নয়। আপনারা প্রত্যক্ষ করছেন, এই আমেরিকা কীভাবে গাজায় মুসলিমদের গণহত্যায় অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলকে মদদ দিচ্ছে, যারা গাজার মুসলিমদেরকে নিঃশেষ করতে খাদ্য ও পানীয় সরবরাহের সকল করিডর বন্ধ করে দিয়েছে, এমনকি হাসপাতালসমূহ গুড়িয়ে দিয়েছে। আমেরিকা রোহিঙ্গা মুসলিমদের ইস্যু করে এই অঞ্চলের কৌশলগত ও সমৃদ্ধশালী সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া এবং এই অঞ্চলে তার উপনিবেশবাদ প্রতিষ্ঠায় তৎপর। তাই, ক্ষমতালোভী যেসব রাজনৈতিকগোষ্ঠী আমেরিকার এই উপনিবেশবাদী প্রকল্পের বিরোধিতা না করে, কেবল রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য মায়াকান্না দেখায় এবং আরাকানকে আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবী করে, তারা প্রকৃতপক্ষে আমেরিকার দালাল এবং তারা আমেরিকার ভূ-রাজনৈতিক কৌশলকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কারণ আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, আমেরিকা সোভিয়েত রাশিয়ার বিরুদ্ধে কীভাবে আফগানিস্তানের মুসলিমদের ব্যবহার করেছে এবং পরবর্তীতে আফগানিস্তানে হামিদ কারজাই ও আশরাফ গনির মত দালালদেরকে গদিতে বসিয়ে লক্ষ-লক্ষ মুসলিমদের হত্যা করেছে। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “যদি তারা তোমাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে, তবে তারা তোমাদের শত্রু হবে এবং তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের হাত ও জিহ্বা মন্দভাবে প্রসারিত করবে এবং তারা কামনা করবে যে, কোনরূপে তোমরাও কাফির হয়ে যাও” [সূরা আল-মুমতাহিনাঃ ২]। তাই দেশের জনগণ, নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের উচিত আমেরিকার এই উপনিবেশবাদী প্রকল্পকে প্রতিহত করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
হে মুসলিমগণ, রোহিঙ্গা মুসলিমরা আমাদের ভাই, এই অঞ্চলে ইসলাম গ্রহণে তারা ছিলেন অগ্রগামী। তারা সম্মানিত এই মুসলিম উম্মাহ্’র অংশ এবং আরাকান হচ্ছে মুসলিম ভূখণ্ড। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন,“এক মুসলিম আরেক মুসলিমের ভাই। সে না তার উপর জুলুম করে এবং না তাকে পরিত্যাগ করে” [সহীহ্ মুসলিম]। তাই জাতীয়তার ভিত্তিতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের পরিত্যাগ করা, কাঁটাতারের মধ্যে তাদের আটকে রাখা অথবা তাদেরকে ইস্যু করে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে স্বাধীন আরাকান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবী তোলা গ্রহণযোগ্য নয়। তথাকথিত জাতিসংঘ কিংবা মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের অধীনে মানবিক করিডর পাহারা দিয়ে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক কৌশলের জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া আমাদের সামরিক বাহিনীর জন্য সুস্পষ্ট শারী‘আহ্ নিষেধাজ্ঞা অর্থাৎ হারাম। বরং আমাদের সামরিক বাহিনীর কর্তব্য হচ্ছে অধিকৃত মুসলিম ভূখণ্ড আরাকানকে মুক্ত করা। হিযবুত তাহ্রীর-এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্র অধিকৃত সকল মুসলিম ভূখণ্ড মুক্ত করার অংশ হিসেবে আরাকানকে মুক্ত করতে আমাদের সামরিক বাহিনীকে অভিযানে প্রেরণ করবে। আরাকানকে খিলাফতের অধীনে ফিরিয়ে আনাই রোহিঙ্গা মুসলিমদের মুক্তির একমাত্র স্থায়ী সমাধান।
﴿إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ﴾
“মু’মিনরা তো পরস্পর ভাই–ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে শান্তি–সমঝোতা স্থাপন করো, আর আল্লাহ্‘কে ভয় করো যাতে তোমরা (তাঁর) অনুগ্রহ লাভ করতে পারো।” [সূরা হুজরাতঃ ১০]
হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস