প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সহযোগীদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করতে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে খিলাফত ধ্বংসের ১০১ তম বর্ষের এই রজব মাসেই খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে
২৫শে ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) মর্মান্তিক পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১৩তম বার্ষিকী পালিত হলো। ২০০৯ সালের এই দিনে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)-এর পিলখানা সদর দফতরে আমরা অসহায়ভাবে ৫৭ জন সাহসী সেনা অফিসারের নৃশংস হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করি। স্বাভাবিকভাবে, হাসিনা সরকারের কাছ থেকে কখনই আমরা এর ন্যায়বিচার আশা করি না, কারণ তারা আমাদের উপর ভারতের আধিপত্য নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে জাতির মেধাবী সন্তানদের নৃশংসভাবে হত্যার কাজে সক্রিয় সহযোগিতা করেছিল। সেই বিদ্রোহের পর হাসিনা সরকারের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপ আমাদের সামরিক বাহিনীকে দুর্বল করার মার্কিন-ব্রিটিশ চক্রান্তকে দিবালোকের মতো স্পষ্ট করে দেয়।
আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে এই বিরাট ষড়যন্ত্রের সূচনা হয় ২০০৮ সালে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সমঝোতার ফলে হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসে। চীনকে দমন এবং খিলাফতের আসন্ন প্রত্যাবর্তন প্রতিহত করার জন্য “পিভট টু এশিয়া” কৌশলের অংশ হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগীতা প্রস্তাবের মাধ্যমে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে ভারতের উত্থানে সহায়তা দিয়ে আসছে। এবং ব্রিটেন স্বাভাবিকভাবেই এই কৌশলকে সমর্থন করেছিল, কারণ এটি তার অনুগত দালালকে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর উপর আধিপত্য প্রদান করে। এভাবে মার্কিন-ব্রিটিশ যৌথ ভূ-রাজনৈতিক কাঠামোর অধীনে বিশ্বাসঘাতক হাসিনা সরকার পিলখানা হত্যাকাণ্ডে সহযোগীতা করে।
এই বছর হিজরী রজব মাসে আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শিকার অফিসারদের জন্য শোক প্রকাশ করছি, অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহ্ও ১৩৪২ হিজরি তথা ১৯২৪ সালের ৩রা মার্চ তারিখে খিলাফত ধ্বংসের বেদনাদায়ক ১০১তম বার্ষিকী স্মরণ করছে। আর এই উভয় ট্র্যাজেডির ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নকারী একই – মুসলিম ভূমির বিশ্বাসঘাতক অপরাধী শাসকগোষ্ঠী। আমাদের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর পিঠে ছুরিকাঘাতকারী হাসিনা সরকার, কামাল আতাতুর্কের বিশ্বাসঘাতকতার উত্তরাধিকারীত্ব বহন করে, যে কামাল শক্তিশালী উসমানী (অটোম্যান) খিলাফত রাষ্ট্রকে ভেঙে ফেলার কাজে ঔপনিবেশিক কাফিরদের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছিল। উম্মাহ্’র পরাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য বরাবরই এই ধরনের বিশ্বাসঘাতক ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদেরকে তাদের ঔপনিবেশিক প্রভুগণ নিয়োগ করে থাকে।
হে সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারগণ! ক্ষমতার চাবিকাঠি আপনাদের হাতে, অথচ এরপরেও আপনারা আপনাদের শহীদ ভাইদের মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য দায়ী হাসিনা সরকারকে চরম শাস্তির মুখোমুখি না করিয়ে ১৩ বছর অতিবাহিত করেছেন! সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে হাসিনা সরকারের বিশ্বাসঘাতকতার প্রতি আপনাদের নিষ্ক্রিয়তা আপনাদেরকে গুরুত্বহীনতার পথে নিয়ে যাচ্ছে। আপনাদের নীরবতা এই শাসকগোষ্ঠীকে আপনাদেরকে একটি সস্তা এবং নমনীয় বাহিনীতে পরিণত করার আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছে, যা কেবল কাফির-মুশরিকদের স্বার্থরক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে। আমরা, হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ, আপনাদেরকে এই অপমানজনক অবস্থা থেকে জেগে ওঠার এবং আপনাদের শক্তি ও মর্যাদা পুনরুদ্ধার করার জন্য একটি সাহসী অবস্থান গ্রহনের আহ্বান জানাই। বিশ্বাসঘাতক হাসিনা সরকারের আনুগত্য প্রত্যাখ্যান করুন, যেটি আপনাদেরকে অসম্মানজনক উপায়ে ইসলাম ও মুসলিমদের শত্রুদের অধীনস্ত করার লক্ষ্যে তাদের সাথে সক্রিয়ভাবে সহযোগীতা করছে। নবুয়্যতের আদলে প্রতিশ্রুত খিলাফত রাশিদাহ্ ফিরিয়ে আনার জন্য হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ (সামরিক সহায়তা) প্রদান করে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা ও তাঁর রাসূলকে (সাঃ) সমর্থন করুন। এই দ্বীনকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসুন, এবং এই রজব মাসেই শত বছরের লাঞ্ছনা ও দুর্বলতার অবসান ঘটান। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন:
*يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ*
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের সেই আহ্বানে সাড়া দাও যখন তোমাদের এমনকিছুর দিকে আহ্বান করা হয় যা তোমাদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করে। (সূরা আল-আনফাল: ২৪)
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া কার্যালয়