দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে হাসিনা সরকার এখন “আগুনের খেলায়” মেতে উঠেছে এবং জনগণের উপর তার অবৈধ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করছে

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে হাসিনা সরকার এখন “আগুনের খেলায় মেতে উঠেছে এবং জনগণের উপর তার অবৈধ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করছে  

 

দ্রব্যমুল্যের কষাঘাতে জনগণের জীবন ও জীবিকা যখন বিপর্যস্ত, তখন রাজধানীর বেইলী রোডের একটি ভবনের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড দেশবাসীকে শোকাবহ করেছে। এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে মারা গেছে একই পরিবারের ৫জন সহ ৪৬ জন, অসংখ্য দগ্ধরা সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং কেউ কেউ এখনও নিখোঁজ রয়েছে। মা-বাবা-শিশু, শিক্ষক-রাজনৈতিক, দেশের বিখ্যাত বিদ্যাপীঠ ভিকারুন্নেসা নূন কলেজ ও বুয়েটের শিক্ষার্থী কেউই এই আগুন থেকে রেহাই পায়নি। ইতিপূর্বে “নিমতলী ফায়ার ট্র্যাজেডি”, “দেশের অন্যতম বৃহৎ হকার মার্কেট বঙ্গবাজার ও নিউ মার্কেটের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে” দোকান-পাট ও মালামাল পুড়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে পড়ে এবং বিশেষজ্ঞরা হাসিনা সরকারের বহুল প্রচারিত তথাকথিত উন্নয়নের বিপরীতে দেশের অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতাকে বার বার প্রশ্নবিদ্ধ করলেও হাসিনা সরকারের টনক নড়ে নাই, বরং এটাকে সে তার রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের অপচেষ্টা করেছে। এবারের ঘটনার তীব্রতা আরও ব্যাপক হওয়া সত্ত্বেও শেখ হাসিনা আগুন লাগার কয়েকদিন পর তার মুখ খুলে এবং তার সরকারের ব্যর্থতার দায় স্বীকার না করে জনগণের উপর দোষ চাপিয়ে দেয় এবং ভবনে ‘ফায়ার এক্সিট’ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে। জনগণের প্রশ্ন, ‘ফায়ার এক্সিট’ না থাকা যদি হতাহতের মূল কারণ হয় তাহলে এই ব্যর্থতা কার? এ বিষয়ে বিবিসি বাংলা’র নিউজ কেপশন ছিল, “অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কে?” শেখ হাসিনা জনগণকে দোষারোপ করে বলে, “আমরা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা করেছি, তবুও মানুষ এতটা সচেতন নয়। ভুক্তভোগীদের দায়িত্বকে পাশ কাটিয়ে সে অভিমত ব্যক্ত করে, “দেখা যাবে এখানে কোনো বীমাও করা ছিল না। কাজেই বিনিময়ে কিছু পাবেও না। অথচ, জনগণ সন্দেহ পোষণ করছে সরকারের আশির্বাদপুষ্ট কুখ্যাত ব্যাংক লুটেরা এস. আলম গ্রুপ চিনির গুদামে আগুনের নাটক করে বীমা কোম্পানীর টাকা লুটের ব্যবস্থা করছে এবং পবিত্র রমযান উপলক্ষ্যে জনগণকে জিম্মি করে চিনির বর্ধিত মূল্য আদায়ের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। হাসিনা সরকার তার দুর্নীতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠান রাজউক ও সিটি কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে, নির্বিচারে রেস্টুরেন্টসমূহে অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দিচ্ছে। অনেক রেস্টুরেন্ট মালিক ও কর্মচারীরা গ্রেফতারের ভয়ে রেস্টুরেন্ট ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, লক্ষ-লক্ষ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও শ্রমিকের জীবিকা হুমকির পড়েছে। এভাবে সে আগুনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি করার মাধ্যমে তার সরকারের অবৈধ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা করছে।

হে দেশবাসী! আমরা প্রত্যক্ষ করছি, আপনাদের মধ্যে অনেকে হতাশা প্রকাশ করছেন কারণ হাসিনা সরকারের দায়িত্বহীনতা ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে আপনারা সোচ্চার হলেও কোন প্রতিকার মিলছেনা। এবং এই যালিম সরকারও চাচ্ছে, আপনারা নিশ্চুপ হয়ে যান, কিন্তু আপনারা যদি সোচ্চার না থাকেন তার যুলুম আরও বৃদ্ধি পাবে, কারণ যালিম শাসকদের যুলুমের কোন সীমারেখা নাই। আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী ﷺ আমাদেরকে যালিম শাসকের বিরুদ্ধে সর্বদা সর্বোচ্চ সোচ্চার থাকতে বলেছেন, “অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে হক্ব কথা বলা সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ (মুসনাদে আহমদ)। এবং এসব যালিম শাসকদের যে অবসান হবে এই বিষয়ে তিনি ﷺ আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন, “আল্লাহ্ যালিমকে (এক নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত) অবকাশ দেন, তারপর যখন পাকড়াও করেন তখন আর কোন ছাড় দেন না (মুসলিম)

হে দেশবাসী! এই ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী মুখে জনগণের কথা উচ্চারণ করলেও তারা জনগণের দেখাশুনার রাজনীতি করে না। আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, দেশের জনগণের ইস্যুতে বিএনপি শাসকগোষ্ঠী “লিপ সার্ভিস” ছাড়া কার্যকর কোন রাজনৈতিক কর্মসূচী গ্রহন করে না, যতটুকু করে তাও শুধু তাদের নেত্রীর মুক্তির জন্য কিংবা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। আপনারা দেখছেন, গোটা দেশের মানুষ যখন দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে বিপর্যস্থ তখন তাদের নেতারা ইসরায়েলের মদদদাতা ক্রুসেডার মার্কিনীদের মধ্যস্থতায় রাজনৈতিক সমঝোতার পথ খুঁজছে এবং দর কষাকষি করতে সিঙ্গাপুরে গমন করেছে। তাই, এই ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠীকে আপনাদের প্রত্যাখ্যান করে প্রকৃত অভিভাবক ও দায়িত্বশীল শাসককে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে হবে। রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেন, “ইমাম (খলিফা) হলেন অভিভাবক এবং তিনি তার নাগরিকদের জন্য দায়িত্বশীল (বুখারী/মুসলিম)। আপনাদেরকে অবশ্যই জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ খিলাফত ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-এর নিষ্ঠাবান নেতৃত্বের সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

﴿قَالَ لَهُ صَاحِبُهُ وَهُوَ يُحَاوِرُهُ أَكَفَرْتَ بِالَّذِي خَلَقَكَ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ ثُمَّ سَوَّاكَ رَجُلاً

“নিশ্চয়ই এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য, যার আছে অন্তর অথবা যে শ্রবণ করে মনোযোগের সাথে [সূরা ক্বাফঃ ৩৭]

 

 

হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস