প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
জনগণের নিকট অনাকাঙ্খিত ডোনাল্ড লু–এর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে আওয়ামী-বিএনপি শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে উচ্ছাস তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের বহিঃপ্রকাশ
নব্য উপনিবেশবাদী রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু-এর বাংলাদেশ সফর দেশের আওয়ামী-বিএনপি শাসকগোষ্ঠীর নিকট উচ্ছাসের কারণ হলেও জনগণের নিকট তা অবাঞ্ছিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। ডোনাল্ড লু-এর সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানায়, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে চমৎকার, এই সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু। আমাদেরও চেষ্টা থাকবে এ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার”। আর অন্যদিকে, ঝিমিয়ে পড়া বিএনপি গোষ্ঠী তার কৃপা লাভের আশায় রাজনীতির মাঠে-ময়দানে আবারও সোচ্চার। বিশ্বব্যবস্থা ও রাজনীতি সম্পর্কে অজ্ঞ কতিপয় তথাকথিত দালাল বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ব্যস্ত মার্কিন-চীন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে তাদের বুদ্ধির মাত্রা জাহির করে জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে। অথচ সচেতন ব্যক্তি মাত্রই জানেন, বর্তমান বিশ্বমোড়ল যুক্তরাষ্ট্র একটি নব্য উপনিবেশবাদী শক্তি, আর ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার’ হলো তার মুখোশ। তাই, যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ কূটনীতিক ডোনাল্ড লু–এর বাংলাদেশ সফরের মূল উদ্দেশ্য ‘অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশন’-এর নামে তাদের উপনিবেশবাদী প্রকল্পসমূহ বস্তবায়নে গতিশীলতা নিয়ে আসা। এই প্রকল্পসমূহের মধ্যে রয়েছে, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপন, আকসা-জিসোমিয়া চুক্তি ও সামরিক জোট গঠন, নব্য ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানী ‘ExxonMobil’-কে গভীর সমুদ্র বন্দরে তেল-গ্যাস (হাইড্রোকার্বন) ব্লকসমূহ বরাদ্দ প্রদান। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “যদি তারা তোমাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে, তবে তারা তোমাদের শত্রু হবে এবং তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের হাত ও জিহ্বা মন্দভাবে প্রসারিত করবে এবং তারা কামনা করবে যে, কোনরূপে তোমরাও কাফির হয়ে যাও” [আল-মুমতাহিনাঃ ২]। ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামী-বিএনপি দালাল শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় টিকে থাকতে অথবা ক্ষমতার মসনদে আরোহন করতে দেশের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নব্য-উপনিবেশ প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করছে, যা দেশের সচেতন জনগণের নিকট দিবালোকের মত স্পষ্ট। যার কারণে, আওয়ামী-বিএনপি শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া এবং জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন।
হে নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীগণ, আপনারা অবগত আছেন কীভাবে পশ্চিমা কাফির উপনিবেশবাদীরা শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে বিশ্বব্যাপী মানবজাতিকে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও বিপর্যয়ের মধ্যে নিমজ্জিত করে রেখেছে! আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাদের সম্পর্কে সতর্ক করে বলেন, “যখন তাদেরকে বলা হয়, “দুনিয়ার বুকে ফ্যাঁসাদ (অনিষ্ট, দুর্নীতি, হাঙ্গামা) ছড়িয়ে দিও না, তখন তারা বলে, আমরা তো শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী! প্রকৃতপক্ষে, তারাই ফ্যাঁসাদ সৃষ্টিকারী, কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে না” [সূরা বাকারাঃ ১১-১২]। আপনাদেরকে আত-তুফায়ল ইবনে আমর আদ-দাউসির (তৎকালীন একজন উঁচু মাপের কবি ও খুব বুদ্ধিমান লোক) সত্যনিষ্ঠতার উদাহরণ স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যিনি মক্কার জাহেল শাসকগোষ্ঠী কুরাইশদের ছল-চাতুরী উপেক্ষা করে রাসূলুল্লাহ্ ﷺ এবং তাঁর উপর নাযিলকৃত সত্য ও পরিপূর্ণ আদর্শ ইসলামের অনুসরণ করেন। আপনারা পশ্চিমাদের ছল-চাতুরী ও স্রষ্টা বিবর্জিত ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের অন্ধ অনুসরণ থেকে বের হয়ে সত্যনিষ্ঠ দল হিযবুত তাহ্রীর-এর সাথে বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নব্য-উপনিবেশ প্রতিহত করুন। আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন, হিযবুত তাহ্রীর মুসলিম উম্মাহ্‘কে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পশ্চিমাদের উপনিবেশবাদের কবল থেকে মুক্ত করতে বিশ্বব্যাপী বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে এবং খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নুসরাহ্ প্রদান করতে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের নিকট আহ্বান জানিয়ে আসছে। আসন্ন খিলাফতই কেবল বর্তমান নীতিবিবর্জিত ও অমানবিক উপনিবেশবাদী পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থা পরিবর্তন করে ন্যায়পরায়ণ ও মানবিক বিশ্বব্যবস্থা গঠন করবে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلاَّ رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ﴾
“(হে নবী) আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য কেবল রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি” [সূরা আম্বিয়া: ১০৭]।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস