بسم الله الرحمن الرحيم
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
ইহুদিবাদীদের নৃশংসতা কেবলমাত্র বিভাজনকারী জাতি-রাষ্ট্রের সীমানা ভেঙ্গে এবং মুসলিম সামরিক বাহিনীগুলোকে খিলাফত রাষ্ট্রের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমেই বন্ধ করা সম্ভব
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ, আজ (২৭/০৯/২০২৪) শুক্রবার বাদ জুমু‘আ ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন মসজিদ প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিন এবং লেবাননে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে। সমাবেশগুলোতে হিযবুত তাহ্রীর-এর বিভিন্ন সদস্য বক্তব্য প্রদান করেন এবং সমাবেশ পরবর্তী মিছিলগুলো শহরের বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে, মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশগুলোতে বক্তাগণের বক্তব্যের একটি সারসংক্ষেপ নিচে উপস্থাপন করা হলো:
প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলো, কিন্তু তারপরও অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্র এখনও বিশ্ববাসীর সম্মুখে গাজা ও পশ্চিম তীরের জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েই যাচ্ছে। আমাদের শহীদের সংখ্যা ইতিমধ্যে চল্লিশ হাজার ছাড়িয়েছে এবং ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি জুড়ে আহত ১ লাখের কাছাকাছি পৌঁছেছে। নিরীহ শিশু, মহিলা এবং বয়স্কদের উপর চলমান এই নিত্যদিনের গণহত্যা যখন শেষ হওয়ার কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না, তখন এর মধ্যে ইহুদিবাদীরা এখন লেবানন জুড়ে আরেকটি ব্যাপক হামলার শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই তারা শত শত লোককে হত্যা করেছে এবং নব্বই হাজারেরও বেশি বাস্তুচ্যুত করেছে। লেবাননের হাসপাতালগুলো নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকে পরিপূর্ণ, যার মধ্যে কয়েক ডজন নারী ও শিশু রয়েছে, যা আমরা ফিলিস্তিনে দেখছি।
হে মুসলিমগণ, এই দৃশ্য দেখে আমাদের এই ধারণা পোষণ করা ভুল হবে যে, অবৈধ রাষ্ট্র ‘ইসরায়েল’ একটি অপ্রতিরোধ্য শক্তি। বরং, তুচ্ছ এই ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটি ছিল পশ্চিমাদের সৃষ্টি করা জারজ সন্তান, যাতে এটি মধ্যপ্রাচ্য ও এর বাইরে সাম্রাজ্যবাদীদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারে। তাই, প্রতারক ও জাহেল পশ্চিমা বিশ্ব এটিকে নির্লজ্জভাবে নিরবিচ্ছিন্ন সামরিক ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমারা ও তাদের হাতিয়ার জাতিসংঘ, তাদের এই জারজ সন্তানকে রক্ষার জন্য এমনকি তাদের তথাকথিত মূল্যবোধ যেমন “স্বাধীনতা” এবং “মানবাধিকার” কে বলি দিতেও পরোয়া করে না, যা তারা শুধুমাত্র তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থের উদ্দেশ্যে মুসলিম ভূমিতে ধর্মের মত করে প্রচার করে থাকে।
আমরা আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, ফিলিস্তিনের বরকতময় ভূমির মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলমান এই ক্রুসেডকে স্থায়ীভাবে শেষ করার পথে একমাত্র বাধা হল মুসলিম ভূমির দালাল শাসকরা। এই বিশ্বাসঘাতক শাসকেরা অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্রের প্রথম সারির রক্ষাকবচ। আমাদের নিষ্পাপ শিশুরা যখন ইহুদিবাদীদের অবরোধের কারণে খাদ্য সরবরাহ বন্ধ থাকায় ক্ষুধার্ত থাকছে এবং মারা যাচ্ছে, তখন মিশর, জর্ডান, মরক্কো এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশ্বাসঘাতক শাসকরা ইহুদিদের কাছে খাদ্য পণ্য রপ্তানি করে চলেছে। এই শাসকরা তাদের শান্তি চুক্তি, সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ, কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে এই হত্যাকারী রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করছে। তারাই আমাদের উপর এই ঔপনিবেশিকদের চাপিয়ে দেওয়া কৃত্রিম জাতি-রাষ্ট্রের সীমানা রক্ষাকারী হিসেবে কাজ করে। পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তারা আমাদের বিভক্ত রাখে, এবং ফিলিস্তিন ও বিশ্বের অন্যান্য অংশে আমাদের নিপীড়িত ভাই-বোনদের সমর্থনে যেতে বাধা দেয়। পশ্চিমাদের চাপিয়ে দেয়া জাতি রাষ্ট্রের সীমানা রক্ষার অজুহাত দিয়ে পশ্চিমাদের এই দালালরা ফিলিস্তিনের মুসলিমদের দুর্দশাকে উম্মাহ্’র সমস্যা হিসেবে না দেখিয়ে ‘ফিলিস্তিনি’ সমস্যা হিসেবে দেখাতে চায়। যেখানে রাসূলুল্লাহ্ ﷺ উম্মাহ্-কে একটি দেহ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং যখন এর কোন অংশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তখন সমগ্র শরীর ব্যথা অনুভব করে।
হে মুসলিমগণ, হিযবুত তাহ্রীর আপনাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে ক্লান্ত হবে না যে, অভিশপ্ত ইহুদীদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও ঘৃণ্য কর্মকান্ড থেকে ফিলিস্তিনের বরকতময় ভূমিকে মুক্ত করার একমাত্র উপায় হল নবুয়তের আদলে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আপনাদেরকে অবশ্যই সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারদের নিকট দাবী জানাতে হবে, যেন তারা পশ্চিমা উপনিবেশবাদীদের চাপিয়ে দেয়া বিভাজনকারী জাতীয়তাবাদী সীমানা ভেঙ্গে ফেলতে, কাপুরুষ বিশ্বাসঘাতক শাসকদের মুসলিম ভূমি থেকে অপসারণ করতে এবং অবিলম্বে ইসলামী ব্যবস্থা তথা প্রতিশ্রুত দ্বিতীয় খিলাফত ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করে। এটা ছাড়া অন্য সব পথই আমাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার অতল গহ্বরে নামিয়ে দেবে।
﴿وَمَا لَكُمْ لَا تُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللهِ وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ وَالْوِلْدَانِ الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ وَلِيّاً وَاجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ نَصِيراً﴾
“আর তোমাদের কী হল যে, তোমরা আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করছ না! অথচ অসহায় নর–নারী এবং শিশুরা চিৎকার করে বলছে, ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে উদ্ধার করুন এ জনপদ থেকে যার অধিবাসীরা যালিম এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন উদ্ধারকর্তা (অভিভাবক) নির্ধারণ করুন। আর নির্ধারণ করুন আপনার পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী” [সূরা আন-নিসা: ৭৫]
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস