প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
অন্তর্বর্তী সরকার মার্কিনীদের প্রতি আনুগত্যের কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে; অপরদিকে ‘করিডর’ ও ‘বন্দর’ ইস্যুতে দেশের সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে সামরিক বাহিনীর অবস্থান জনগণের প্রত্যাশার বহিঃপ্রকাশ
রোহিঙ্গা মুসলিম ও দেশের সার্বভৌমত্বকে উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী সরকার যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে ‘করিডর’ প্রদান এবং ‘নিউ মুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল’-এর কার্যক্রম উপনিবেশবাদী মার্কিন প্রভাবাধীন কোম্পানী “ডিপি ওয়ার্ল্ড”-এর কাছে হস্তান্তর করতে যখন মরিয়া, তখন আমাদের সামরিক বাহিনী দেশের সার্বভৌমত্বের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়ে জনগণের নিকট ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, “তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কাজেই প্রত্যেকেই নিজ অধীনস্তদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। যেমন– জনগণের ইমাম (শাসক) তাদের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে” (সহীহ্ আল-বুখারী)। এই হাদিস থেকে স্পষ্ট, প্রত্যেক পদস্থ ব্যক্তির নিকট অর্পিত দায়িত্ব হচ্ছে একটি আমানত এবং এই আমানত রক্ষা করা তার জন্য ওয়াজিব (আবশ্যক)। আর অন্যদিকে, এই আমানত রক্ষা না করা হচ্ছে জনগণের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা, যার জন্য সে দুনিয়াতে বিচারের সম্মুখীন হবে এবং পাশাপাশি আখিরাতে তার জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন শাস্তি। জনগণের প্রতিবাদ ও ক্ষোভকে তোয়াক্কা না করে অন্তর্বর্তী সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এসব উপনিবেশবাদী প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিজ্ঞার কারণে তাদের কার্যক্রমের বিষয়ে জনগণের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে এবং তাদেরকে জনগণ মার্কিনীদের অনুগত হিসেবে চিহ্নিত করছে। যার ফলে, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে এবং অস্তিত্বের সংকটে পড়ছে। বৃটেনের অনুগত পতিত হাসিনা সরকার আরাকান আর্মিকে মোকাবেলায় সুবিধা করে দিতে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের সামুদ্রিক অঞ্চলে বৃটেন সমর্থিত মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর যুদ্ধজাহাজ চলাচলের সুযোগ করে দিয়েছিল, যারা রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যা, নির্যাতন ও বাস্তুচ্যুত করেছিল। মার্কিন সমর্থনপুষ্ট বৌদ্ধ সন্ত্রাসী আরাকান আর্মিও মিয়ানমারের জান্তা সরকারের মতই রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাস্তুচ্যুত, নির্যাতন ও গণহত্যার জন্য দায়ী। তাই, অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক আরাকান আর্মির প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, এবং ফিলিস্তিন-ইরাক-আফগানিস্তান-সিরিয়া-ইয়েমেন সহ বিশ্বব্যাপী মুসলিমদেরকে গণহত্যায় জড়িত মার্কিনীদের প্রতি আনুগত্যের নির্লজ্জ দৃষ্টান্ত।
অপরদিকে, মার্কিন অনুগত রাজনৈতিক গোষ্ঠী ও বুদ্ধিজীবিদের মুখোশও জনগণের নিকট উন্মুক্ত হয়ে পড়েছে। তারা মার্কিনীদের উপনিবেশবাদী প্রকল্পকে অন্ধভাবে সমর্থন করছে এবং মার্কিনীদের স্বার্থে আমাদের সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিভক্তির অপচেষ্টা করছে, যেভাবে যালিম হাসিনা ভারতের স্বার্থে পিলখানা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করে আমাদের সামরিক বাহিনীকে দুর্বল করার অপচেষ্টা করেছিল। প্রকৃতপক্ষে, জনগণের স্বার্থ রক্ষা হতে হবে রাজনীতির অন্যতম ভিত্তি, যার মাধ্যমে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হবে। অথচ এসব নির্বোধ রাজনৈতিক গোষ্ঠী ক্ষমতায় টিকে থাকতে অথবা ক্ষমতায় আসীন হতে পশ্চিমাদের অন্ধ আনুগত্য করে এবং জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আর যখন তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, তখন পশ্চিমারা তাদেরকে টিস্যু পেপারের মত ছুঁড়ে ফেলে দেয় এবং তাদের স্থলে অন্য দালালদের প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করে, যার বহু দৃষ্টান্ত আমরা ইতিমধ্যে প্রত্যক্ষ করেছি।
হে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত নিষ্ঠাবান অফিসারগণ! অনির্বাচিত কিংবা নির্বাচিত, কারোরই দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নেই। পশ্চিমাদের অনুগত কোন শাসকগোষ্ঠী কখনোই এদেশের জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করে না, এটাই প্রমাণিত সত্য। আপনারা নিশ্চয়ই অনুধাবন করেছেন, দেশের জনগণের পক্ষে আপনাদের সঠিক অবস্থানের কারণে আপনারা জনগণের আস্থা লাভ করেছেন, এবং আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র প্রতি আপনাদের আনুগত্যের প্রতিফলন ঘটেছে, যা আপনাদেরকে সম্মানিত করেছে। আমাদের প্রাণপ্রিয় রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, “ইমাম (খলিফা) হচ্ছেন কমান্ডার, যার নেতৃত্বে মুসলিমরা যুদ্ধ করে এবং নিজেদেরকে রক্ষা করে” [মুসনাদে আহমদ]। তাই আপনাদেরকে মুসলিম উম্মাহ্’র প্রকৃত নেতৃত্ব নবুয়তের আদলে খিলাফত ফিরিয়ে আনতে হবে, যার অধীনে তখন আপনারা ইসলাম, জনগণের স্বার্থ ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। ইসলাম ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের স্বার্থে অধিকৃত মুসলিম ভূখন্ড আরাকানকে বিজয় করে খিলাফতের অধীনে ফিরিয়ে আনতে পারবেন। তাই, হিযবুত তাহ্রীর-এর পক্ষ থেকে আমাদের উদাত্ত আহ্বান, সেই প্রকৃত নেতৃত্ব খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করুন।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ﴾
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সেই আহ্বানে সাড়া দাও, যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে আহ্বান করা হয় যা তোমাদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করে” [সূরা আল-আনফালঃ ২৪]
হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস