بسم الله الرحمن الرحيم
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর সদস্য ইমতিয়াজ সেলিমকে গ্রেপ্তার করে একটি নির্লজ্জ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে
পতিত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের ঐতিহ্যবাহী কায়দায় ৪ অক্টোবর, ২০২৪ ভোররাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ -এর সদস্য ইমতিয়াজ সেলিমকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের ভাষায়, তার অপরাধ হলো তিনি হিযবুত তাহ্রীর-এর রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেছেন। আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, ইমতিয়াজ সেলিম হিযবুত তাহ্রীর-এর উপর পতিত হাসিনা সরকারের আরোপিত অবৈধ নিষেধাজ্ঞার উঠিয়ে নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরে আবেদন পেশ করেছিলেন ও তারপর এই আবেদনের বিষয়ে আইনজীবীদের নিয়ে একটি প্রেস ব্রিফিং করেছিলেন। সত্যনিষ্ঠ ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিযবুত তাহ্রীর-এর উপর স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের অন্যায় আদেশকে চ্যালেঞ্জ করাই কি তার অপরাধ? এটাই কি তার অন্যায়, সে হিযবুত তাহ্রীর-এর পক্ষ থেকে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার কর্তৃক ছিনিয়ে নেয়া রাজনৈতিক অধিকার ফেরত পাওয়ার দাবী করেছে? আমরা, হিযবুত তাহ্রীর অনতিবিলম্বে ইমতিয়াজ সেলিমের নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করছি।
আপনারা এই বিষয়টি ইতিমধ্যে অবগত আছেন, কেন হাসিনা সরকার হিযবুত তাহ্রীর-এর উপর অবৈধ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ২০০৯ সালে যখন হাসিনা ও ভারতের ষড়যন্ত্রে পিলখানায় নৃশংস হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হলো, তখন বাংলাদেশে একমাত্র দল এই হিযবুত তাহ্রীর নিষ্ঠা ও সাহসীকতার সাথে এই বিষয়টি জাতির কাছে উন্মোচন করে। খুনি হাসিনা সরকার হিযবুত তাহ্রীর-কে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে, এর সত্য ও প্রতিবাদী কণ্ঠকে রুদ্ধ করতে নিছক একটি প্রেস নোটের মাধ্যমে- যেখানে কোন স্মারক নং, এসআরও নং ও আইনের ধারা উল্লেখ ছিলনা- এর কার্যক্রমের উপর অবৈধ ও অন্যায্য নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়। কিন্তু, হিযবুত তাহ্রীর তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখে, বিশেষত হাসিনা সরকার কর্তৃক সেনা অফিসারদের গ্রেফতার, গুম, খুন, বরখাস্তের প্রতিবাদ করাসহ তার দেশ-জনগণ-ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে রাজনৈতিক সংগ্রাম অব্যাহত রাখে। এমন প্রেক্ষাপটে, যালিম হাসিনা ২০১৩ সালে আবারও কোন আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে, গায়ের জোরে নির্বাহী আদেশে হিযবুত তাহ্রীর-কে কুখ্যাত সন্ত্রাসবিরোধী আইন নামক কালো আইনে তফসীলভুক্ত করে।
হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই ভারতীয় শাসকগোষ্ঠী ও তাদের গণমাধ্যম কতৃক ইসলাম ও হিযবুত তাহ্রীরকে নিয়ে নানাবিধ বানোয়াট, মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য, বিবৃতি ও সংবাদ প্রচার করা হতে থাকে। আমরা জিজ্ঞাসা করছি, অন্তর্বর্তী সরকারের কি পশ্চিমা শক্তিদের প্রতি ও ভারতের প্রতি অনুগত? হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ-এর সদস্য ইমতিয়াজ সেলিমকে গ্রেপ্তার করে তারা কী প্রমাণ করতে চাইছে? আমরা, হিযবুত তাহ্রীর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দালাল হাসিনার মত পশ্চিমা কাফির উপনিবেশবাদীদের ও তাদের আঞ্চলিক দোসর ভারতের উপর নির্ভরশীলতা পরিহার করে জনগণের আবেগ-অনুভুতি ও আশা আকাঙ্খার দিকে মুখ ফিরাতে আহ্বান জানাই। আপনারা লক্ষ্য করুন, যে ছাত্র-জনতার রক্তের উপর ভর করে আপনারা ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন, তারাই আপনাদের ভারত তোষণ নীতির তীব্র সমালোচনা করছে। আল্লাহ্ ﷻ বলেন,
﴿لاَ يَتَّخِذْ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَيْسَ مِنْ اللَّهِ…﴾
“মুমিনরা যেন মুমিনদের ছাড়া কাফিরদেরকে বন্ধু না বানায়। আর যে কেউ এরূপ করবে, আল্লাহ্’র সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই” [সূরা আলি-ইমরানঃ ২৮]।
আমরা পরিষ্কার ভাষায় পুনঃব্যক্ত করতে চাই, হিযবুত তাহ্রী সত্যনিষ্ঠ ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল যার উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলিম উম্মাহ্-কে পুনঃজাগরণ করে নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামী জীবনধারা ফিরিয়ে আনা এবং মুসলিম উম্মাহ্-কে পশ্চিমা উপনিবেশবাদী রাষ্ট্রসমূহ ও তার আঞ্চলিক দোসরদের কবল থেকে মুক্ত করা। আল্লাহ্ ﷻ বলেন,
﴿وَلْتَكُنْ مِنْكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنْ الْمُنْكَرِ وَأُوْلَئِكَ هُمْ الْمُفْلِحُونَ﴾
“তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত, যারা কল্যাণের দিকে আহবান করে, সৎকাজের আদেশ করে এবং অসৎকাজ হতে নিষেধ করে আর এরাই সফলকাম”[সূরা আলি-ইমরানঃ ১০৪]। একমাত্র নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই নতুন বাংলাদেশ একটি ন্যায়-ভিত্তিক ও নেতৃত্বশীল রাষ্ট্রে পরিণত হবে। তাই আমরা, হিযবুত তাহ্রীর-এর পক্ষ থেকে দেশের সকল নিষ্ঠাবান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা যার যার অবস্থান থেকে নবুয়তের আদলে খিলাফত ফিরিয়ে আনতে আপনারা হিযবুত তাহ্রীর-এর সাথে হাতে হাত মিলিয়ে এবং এর পক্ষে অবস্থান নিয়ে কাজ করুন।
“…অতপর যুলুমের শাসনের অবসান হবে। তারপর আবারও ফিরে আসবে খিলাফত–নবওতের আদলে” (হাদিসঃ মুসনাদে আহমদ)।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস